বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থান। এবং পারমাণবিক শক্তি দ্বারা কিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।

 

বাংলাদেশে পারমাণবিক শক্তি এবং পারমাণবিক  বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থান।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলাে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশ আণবিক শক্তিতে যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছে। তাদের অধিকাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্রই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতও পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। বর্তমানে 35টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশও পরমাণু গবেষণা চুল্পি রয়েছে। 


1986 সালে সাভারে স্থাপিত 3 MW ক্ষমতাসম্পন্ন গবেষণা চুল্লিটি সুষ্ঠুভাবে একাধারে গবেষণা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং চিকিৎসায় ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় আইসােপ উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়াও পাবনার রূপপুর নামক স্থানে ২ (দুটি) ইউনিটে মােট 2400MW ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ চলছে, যা ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করবে।


রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পাবনা।



বর্তমানে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন চিকিৎসা, খাদ্য, কৃষি, শিল্প ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে কাজ করে আসছে। তার মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক বিকিরণ ও তেজস্ক্রিয় আইসােটোপের সাহায্যে গবেষণা, চিকিৎসা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা,গবেষণার ফল বাস্তবে প্রয়ােগ। এর ফলশ্রুতিতে ময়মনসিংহ এবং সিলেটে পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। 


যেহেতু

আমাদের দেশ গরিব এবং আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য ক্রমবর্ধমান জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এর চাহিদা মেটানাের জন্য কম খরচে অধিক শক্তি উৎপাদনে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কোনাে বিকল্প নেই। এজন্য দুর্গম অঞ্চলে বেশি সংখ্যায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে দেশের বিদ্যুৎ বিভাগ। 



ভূমিকা:

পারমাণবিক শক্তিকে ইংরেজিতে নিউক্লিয়ার এনার্জি বলা হয়। অর্থাৎ যে জেনারেটিং স্টেশনে নিউক্লিয়ার এনার্জি বা পারমাণবিক শক্তিকে ইলেকট্রিক্যাল এনার্জি বা বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করা হয়ে থাকে, তাকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বলে।


 

যেভাবে পারমাণবিক শক্তি দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়



নিউক্লিয়ার বিয়্যাক্টরের মধ্যে ইউরেনিয়াম-235, বােরিয়াম-232 ইত্যাদির বিভাজন প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে যে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়, তাকে কাজের লাগিয়ে বিদ্যু উৎপাদন করা হয়। অন্যান্য পাওয়ার প্লান্টের তুলনায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্ত্রে জ্বালানি কম প্রয়ােজন হয়, অর্থাৎ কম খরচে অধিক পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।1 কেজি ইউরেয়ািম-235 থেকে যে পরিমাণ তাপশক্তি পাওয়া যায় সেই পরিমাণ তাপশক্তি উৎপাদন করতে প্রায় 1700 টন তেল বা প্রায় 4500 টন কয়লার প্রয়ােজন হয়।  


 যখন কোন তেজস্ক্রিয় পদার্থ যেমন একটি ইউরেনিয়াম-235 এর আইসোটোপকে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করা হয় তখন তেজস্ক্রিয়  পদার্থের পারমাণবিক শৃংখল বিক্রিয়া শুরু হয়।আর এই বিক্রিয়ার ফলে প্রচুর পরিমান তাপ নির্গত হয়। যা পানি কি ফুটিয়ে বাষ্পে পরিণত করে। আর এই বাষ্প দ্বারা টারবাইনকে ঘোরানো হয়।এবং টারবাইনের সঙ্গে জেনারেটরের রোটোর সংযুক্ত করা থাকে।


 অতএব, টারবাইন যখন ঘুরে জেনারেটরও তখন ঘুরে এবং জেনারেটর ঘূর্ণনের ফলে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। আর এভাবেই বিভিন্ন দেশ নিউক্লিয়ার এনার্জিকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করছে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ